মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীন রাষ্ট্র বাংলাদেশ।



১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর
স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশের
অভ্যুদয় সমগ্র উপমহাদেশের
স্মরণকালের ইতিহাসে
উল্লেখযোগ্য ঘটনা। দীর্ঘ নয়
মাসব্যাপী মুক্তি সংগ্রামের
মাধ্যমে এক সাগর রক্তের
বিনিময়ে এ দেশের লাখো
লাখো সূর্য সন্তান পশ্চিমা
উপনিবেশিক শোষণের নাগপাশ
থেকে স্বদেশকে মুক্ত করে
সৃষ্টি করলেন এক অভূতপূর্ব ইতিহাস।
 বাংলাদেশের স্বাধীনতা  যুদ্ধ ছিল ১৯৭১ সালে
সংঘটিত তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তানের বিরুদ্ধে
পূর্ব পাকিস্তানের সশস্ত্র সংগ্রাম, যার মাধ্যমে
বাংলাদেশ একটি স্বাধীন দেশ হিসাবে পৃথিবীর
মানচিত্র আত্মপ্রকাশ করে। ১৯৭১ সালের ২৫শে
মার্চ রাতের অন্ধকারে পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী
পূর্ব পাকিস্তানে বাঙালি নিধনে ঝাঁপিয়ে পড়লে
একটি জনযুদ্ধের আদলে মুক্তিযুদ্ধ তথা
স্বাধীনতা যুদ্ধের সূচনা ঘটে।
পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর ইস্ট
বেঙ্গল রেজিমেন্ট, ইস্ট পাকিস্তান রাইফেলস
(ইপিআর), ইস্ট পাকিস্তান পুলিশ, সামরিক বাহিনীর
বাঙ্গালী সদস্য এবং সর্বোপরি বাংলাদেশের
স্বাধীনতাকামী সাধারণ মানুষ দেশকে পাকিস্তানি
সামরিক বাহিনীর কব্জা থেকে মুক্ত করতে
কয়েক মাসের মধ্যে গড়ে তোলে
মুক্তিবাহিনী । গেরিলা পদ্ধতিতে যুদ্ধ চালিয়ে
মুক্তিবাহিনী সারাদেশে পাকিস্তানী হানাদার
বাহিনীকে ব্যতিব্যস্ত করে তোলে।
মুক্তিবাহিনীর আক্রমণের
মুখে পর্যদুস্ত ও হতোদ্যম
পাকিস্তানী সামরিক বাহিনী আত্মসমর্পণের
সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। ১৬ ডিসেম্বর বিকেলে
রেসকোর্স ময়দানে
(বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ) বাংলাদেশে
অবস্থিত পাকিস্তানী সামরিক বাহিনীর অধিনায়ক লেঃ
জেঃ এ. এ. কে নিয়াজী হাজার হাজার উৎফুল্ল জনতার
সামনে আত্মসমর্পণের দলিলে স্বাক্ষর করে।
প্রায় ৯৩,০০০ পাকিস্তানী সৈন্য আত্মসমর্পণ করে, যা
ছিল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সর্ববৃহৎ আত্মসমর্পণ
অনুষ্ঠান। বাংলাদেশের
মানুষের বহু আকাঙ্খিত বিজয় ধরা দেয় যুদ্ধ শুরুর
নয় মাস পর। ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তান সেনাবাহিনী
আত্মসমর্পন করলেও সারা দেশে সকল
পাকিস্তানীদের আত্মসমর্পণ করাতে ২২
ডিসেম্বর পর্যন্ত হয়ে যায়।
এরই মাধ্যমে নয় মাস ব্যাপী রক্তক্ষয়ী
মুক্তিযুদ্ধের অবসান হয়; প্রতিষ্ঠিত হয় বাঙ্গালী
জাতির প্রথম স্বাধীন রাষ্ট্র বাংলাদেশ ।
লেখক: অাজহারুল ইসলাম রনি
 সি.ই. ডুয়েট,গাজীপুর।

Comments

Popular Posts